গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও এখনো বেশ কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
সম্প্রতি ‘২০২৪ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস: বাংলাদেশ’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। সে প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের সরকারের আমলে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ছিল বেআইনি বা নির্বিচার হত্যা, গুম, নির্যাতন, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার, বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের ওপর দমন–পীড়ন, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, সেন্সরশিপ, শ্রমিক অধিকার হরণ এবং শিশুশ্রমের ভয়াবহ রূপ।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আগের সরকারের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়মুক্তির সংস্কৃতি ব্যাপক ছিল। সরকারি কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও কার্যকর তদন্ত বা শাস্তির উদাহরণ ছিল খুবই কম।
গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলন এবং পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন। তিন দিন পর নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও নেতাকে গ্রেপ্তার করে সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যে দেখা যায়, গত জুলাই ও আগস্টে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল। একই সঙ্গে জাতিসংঘের সহযোগিতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ব্যবহার করে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে। বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেদনে যেমন স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত রয়েছে, তেমনি ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগও উঠে এসেছে।
পতাকানিউজ/এআই

