রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে ঢুকতেই চোখে পড়ে—ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙ্গা কিংবা করলা—সবজির ঝুড়ির পাশে মোটা অঙ্কের দাম লেখা। আলু আর কাঁচা পেঁপে ছাড়া কেজিপ্রতি ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ব্যবসায়ীরা বসে আছেন, কিন্তু আগের মতো ভিড় নেই, কারণ ক্রেতাদের হাতে আজকাল আধা কেজির হিসাব।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাজার ঘুরে দেখা গেল—ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৮০, গোল বেগুন ১০০, লম্বা বেগুন ৬০, ঝিঙ্গা ১০০, চিচিঙ্গা ৮০, ধন্দুল ৮০, বরবটি ১০০, করলা ১০০, শসা ৮০, টমেটো ১৪০, কাঁচা মরিচ ২০০, কচু ৫০, আলু ২৫, কচুর লতি ৬০, কাঁকরোল ৮০, গাজর ৮০ আর মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল।
শান্তিনগর বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জাহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল বাজারে ঢুকলেই মনে হয় সবজির দোকানে নয়, স্বর্ণের দোকানে এসেছি। ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই বললেই চলে। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য আধা কেজির বেশি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এতদিন ধরে দাম বাড়ছে অথচ কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই।
একই বাজারে গৃহিণী নাসরিন আক্তার বলেন, একটা সময় বাজারে এসে ৫-৬ ধরনের সবজি এক কেজি করে কিনতাম। এখন বাধ্য হয়ে আধা কেজি ঢেঁড়স, আধা কেজি বেগুন, আধা কেজি করলা নিচ্ছি। সংসারের খরচ মেলানোই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সবজির দাম বেশি হওয়ায় আমাদের বিক্রিও কমে গেছে। আগে দিনে ২০ কেজি বিক্রি হতো, এখন ৫ কেজিও বিক্রি হয় না। ক্রেতারা এক কেজির জায়গায় আধা কেজি কিনে নিচ্ছেন। এতে আমাদেরও লোকসান হচ্ছে।’
মগবাজারের আরেক বিক্রেতা হাবিবুর রহমান জানান, আরও কিছুদিন দাম বাড়তি থাকবে। কারণ, এখন মৌসুমী সবজির সরবরাহ কমে গেছে। নতুন ফসল বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো আশা নেই।
সবজির বাজারে লাগামহীন এই দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো পড়েছে সবচেয়ে বড় সংকটে। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। আর ক্রেতারা দাবি করছেন, বাজার মনিটরিং ও কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
পতাকানিউজ/এনটি

