জমে উঠা ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপা ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখলো বাংলাদেশ। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে শেষ বলে ৮ রানের জয় পেয়েছে লিটন দাসের দল। মোস্তাফিজের করা শেষ ওভারের শেষ বলে নুর আহমেদ নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিতেই শেষ ম্যাচ। ১৪৬ রানে অলআউট আফগানিস্তান। এর আগে প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তানকে ১৫৪ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ।
এই জয়ে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম পর্ব শেষ করল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে টপকে আপাতত পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে দুটি জয় পাওয়া শ্রীলঙ্কার পয়েন্টও ৪। তবে শ্রীলঙ্কা নেট রান রেটের হিসেবে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। শ্রীলঙ্কার নেট রাট রেট +১.৫৪৬, বাংলাদেশের –০.২৭০।
এই শ্রীলঙ্কার হাতেই অবশ্য বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠার চাবিকাঠি। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তানকে হারালেই সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি পরিত্যক্ত হলেও বাংলাদেশই উঠবে সুপার ফোরে। তবে আফগানিস্তান জিতে গেলে আফগানরা উঠে যাবে সুপার ফোরে।

ব্যাট হাতে শুরুর ঝলক শেষ দিকে মিলিয়ে গেলেও বল হাতে আগুনে শুরু এনে দেন নাসুম-রিশাদরা। আর তাতে বিদেশের মাটিতে আফগানদের প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে হারাল লাল-সবুজের দল।
১৫৫ রানের টার্গেট দিয়ে আফগানিস্তানকে পাওয়ায় প্লেতে ২৭ রানে আটকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। উইকেট নেয় ২টি। যার প্রথমটি আবার ইনিংসের প্রথম বলেই। সেদিকউল্লাহ আতালকে ‘গোল্ডেন ডাকে’ আউট করেন টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা নাসুম আহমেদ। পরে দলীয় ১৮ রানের সময় ইব্রাহিম জাদরানকেও ফেরান নাসুম। তৃতীয় উইকেটে ৩৩ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামলিয়ে নিচ্ছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও গুলবাদিন নাইব। তবে ১২ রানের ব্যবধানে দুজনকে ফিরিয়ে আফগানিস্তানকে এবার ধাক্কা দেন রিশাদ হোসেন। বিশেষ করে শুরুতে দেখেশুনে খেলা গুরবাজ ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই তাকে ৩৫ রানে বিদায় করে।
দলীয় ৭৭ রানে মোহাম্মদ নবীকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের দিকে জয়ের পাল্লা ভারী করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে দল অর্ধেক উইকেট হারালেও বাংলাদেশের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। কেননা ১৮৭.৫০ স্ট্রাইক রেটে দ্রুত ৩০ রান করেন। ১ চারের বিপরীতে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে আফগানদের জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। তবে তাসকিন আহমেদ তা হতে দেননি। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা খাওয়ার ফিরতি বলে আফগান অলরাউন্ডারকে সাইফের ক্যাচ বানান।

শেষ দিকে ১১ বলে ২০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয়ের পথে চোখ রাঙানি দিচ্ছিলেন রশিদ খান। তবে ১৯ তম ওভারে আফগানিস্তানের অধিনায়ক এবং এম গজনফারকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগানো মুস্তাফিজুর ম্যাচ বাংলাদেশের করে দেন। চতুর্থ বলে অবশ্য রান আউটের সুযোগটা কাজে লাগালে ওই ওভারে জয় নিশ্চিত হতো। তবে শেষ ওভারে ২১ রানের সমীকরণে বল করতে এসে বাংলাদেশকে রানের ৮ জয় এনে দিয়েছেন তাসকিন। নুর আহমেদের কাছে টানা দুই ছক্কা হজমের পর তাকে শেষ বলে আউট করেন বাংলাদেশি পেসার।
আবুধাবিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ ১২ ইনিংসে ওপেনিংয়ে ফিফটি রানের জুটি না পাওয়া বাংলাদেশ পায় ৬৩ রান। যার ৫৯ রানই আবার পাওয়ার প্লেতে নেন তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসান। তবে এই দুর্দান্ত শুরুর ফিনিশিংটা করতে পারেনি বাংলাদেশ৷ যার ফলে ৫ উইকেটে ১৫৪ রানে থামতে হয়।
শেষ ৪৮ বলে যে মাত্র ৫৯ রান নিতে পেরেছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। ১৮ বলে কোনো রান নিতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ, সাইফকে সঙ্গী করে ফিফটি হাঁকানো তানজিদ তামিম কী দুর্দান্ত শুরুই না এনে দিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত ৩০ রানে সাইফ বিদায় নেওয়ায় তাদের পথ যায় বেঁকে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে এসে দ্রুত ফেরেন অধিনায়ক লিটনও। ব্যাটিং করা বাকি সবাই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করলেই কেউই টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করতে পারেননি। শুধু খেলেছেন তানজিদ তামিমই।
পতাকানিউজ/কেএস

