ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত একদিনে ইসরায়েলি হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার ফলে গাজায় মোট প্রাণহানি প্রায় ৬১ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে গাজায় আরও ৩১ জন নিহত হন এবং অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই তথ্য মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বার্তাসংস্থা আনাদোলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬১ হাজার ৫৯৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০০ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে, যার মধ্যে ১১ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে ৫১৩ জন আহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮ জনে। এখনো অনেক মরদেহ ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তার ওপর পড়ে আছে, যেগুলো অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা উদ্ধার করতে পারছে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলায় ৩১ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩৮৮ জন আহত হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে মোট নিহত ১ হাজার ৮৩৮ জন এবং আহত অন্তত ১৩ হাজার ৪০৯ জন হয়েছে।
তবে দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতেও আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, এদের মধ্যে দুইজন শিশু। গাজায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা এখন বেড়ে ২২৭ জন, যার মধ্যে ১০৩ শিশু। গাজার মানবিক সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের পুনরায় হামলা শুরু করার পর থেকে ১০ হাজার ৭৮ জন নিহত ও ৪২ হাজার ৪৭ জন আহত হয়েছেন। এই হামলা জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গ করে চালানো হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োাভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলা চলছে।
গাজার মানবিক বিপর্যয় ও ইসরায়েলের হামলার এই তথ্যগুলো মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সমর্থন বৃদ্ধির প্রয়াসকে আরও জরুরী করে তুলেছে।
পতাকানিউজ/এনটি

