বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর এলাকায় গড়ে উঠেছে ডজনখানেক স্বয়ংক্রিয় চাল কারখানা। তবে এসব কারখানার একটিতেও নেই পানি শোধানাগার (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট)। কারখানার দূষিত পানি প্রতিদিনই গিয়ে পড়ছে রক্তদহ বিলের শাখা খালে। এতে পানি দূষিত হয়ে মরছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ জলজ প্রাণী। এছাড়া দূষিত পানির উৎকট গন্ধে বিলের পাশের কয়েকটি গ্রামে দেখা দিয়েছে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ।
এদিকে দূষণে ব্যাপকহারে মাছ মরার কারণে ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে দেশি মাছের তীব্র সংকট। পাশাপশি বিলে মাছ ধরতে না পেরে শতাধিক জেলে পরিবার এখন বেকার। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেও মিলছে না সমস্যার সমাধান।
সরেজমিন দেখা গেছে, সান্তাহার শহরের খাড়ির সেতু এলাকাসহ শহরের আশেপাশে রক্তদহ বিলের শাখা খাল ঘিরে গড়ে উঠা প্রায় একডজন চাল কারখানার একটিতেও নেই পানি শোধানাগার। এতে কারখানার দূষিত সব পানি ছেড়ে দেয়া হয় বিলের শাখা খালে। সারাবছর বিষাক্ত পানি পড়ছে খালে। পানি দূষিত হয়ে প্রতিদিন মরছে খাল ও বিলের মাছ। এছাড়া দূষিত পানির দুর্গন্ধে তিয়রপাড়া, কায়েতপাড়া, কাশিমিলা, প্রসাদখালি, দমদমাসহ বেশকয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ মারাত্মক পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে।মাছ মরে যাওয়ায় কয়েকশ জেলে পরিবার বেকার হয়ে পড়েছে।
প্রসাদখালী গ্রামের মৎস্যজীবি সুজিত হালদার, গোবিন্দ হালদার জানান, বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরে তারা সারাবছর সংসার চালান। কিন্তু এ বছর কারখানার পানি বিলে আসার পর তারা মাছ ধরতে পারেননি। তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তারা চেয়ারম্যানসহ অনেককে বলেছেন। কিন্তু কেউ তাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেননি।
দমদমা গ্রামের বাসিন্দা সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিলের পানির পচা দুর্গন্ধে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দূষিত পানিতে কাজ করে অনেকের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল সেই পানি পান করে অসুস্থ হচ্ছে।
কাশিমিলা গ্রামের আয়নুল হক বলেন, ‘এভাবে দূষিত পানি বিলে আসা অব্যাহত থাকলে রক্তদহ বিল মাছশূন্য হয়ে পড়বে।’
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মিল মালিক বলেন, ‘সান্তাহার শহরে স্বয়ংক্রিয় চাল কারখানার একটিতেও নেই পানি শোধানাগার। তবে এ বিষয়ে দ্রুতই আমরা উদ্যোগ নেব।’
পতাকানিউজ/কেআই/আরবি

