বাংলা নাট্য ও চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় আর নেই। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় ৮৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নেন তিনি। পেটের ক্যানসার, হৃদযন্ত্রে পেসমেকার, একটি কিডনি অচলসহ নানা জটিল রোগে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন এই কিংবদন্তি। গত ছয় মাস ছিলেন শয্যাশায়ী।
সাত দশকজুড়ে অভিনয় জীবনে থিয়েটার, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের মঞ্চে সমান দক্ষতার ছাপ রেখেছেন বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিনয়ের জগতে পা রেখে একসময় পর্দা ভাগ করেছেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, ছবি বিশ্বাসের মতো মহান শিল্পীদের সঙ্গে। ‘ঠগিনী’ ও ‘আমি সে ও সখা’-র মতো সিনেমায় তার অনবদ্য অভিনয় দর্শকের মনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। সর্বশেষ তাকে দেখা যায় জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গীতা এলএলবি’-তে ‘ব্রজবালা দেবী’ চরিত্রে।
গত এপ্রিলেও শুটিং সেটে ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু পাঁজরের চোটের পর হঠাৎই শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যায়। অসুস্থ শরীর নিয়েই চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে তাকে অভিনয় চালিয়ে যেতে হয়েছিল। মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকার ওষুধ ও দামি ইনজেকশনের খরচ বহন করতেন নিজেই। মেয়ে বিবাহিত হওয়ায় নিয়মিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে সহকর্মী ও প্রযোজকদের সহায়তা তিনি পেয়েছিলেন।
সহ-অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় জানান, শেষ সময়টায় প্রচণ্ড কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তাকে। সেই সময়ে প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তীসহ টলিপাড়ার বহু শিল্পী এগিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। মৃত্যুর সময় তার একমাত্র সঙ্গী ছিলেন বহু বছরের গৃহসহায়িকা, যিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সযত্নে দেখাশোনা করেছেন এই প্রিয় মুখটিকে।
টলিপাড়ার এই বর্ষীয়ান শিল্পীর প্রয়াণে নেমে এসেছে শোকের গভীর ছায়া। সহকর্মী, অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্মরণ করছেন তার অভিনয়-জীবনের অসংখ্য উজ্জ্বল মুহূর্ত, আর জানাচ্ছেন আন্তরিক শোক ও ভালোবাসা।
পতাকানিউজ/এনটি

