দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর চাঁদপুরে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। ছোট থেকে বড় সব সাইজের ইলিশের কেজিপ্রতি দাম কমেছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। মৌসুমের শুরু থেকেই ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ছিল। দাম কমায় খানিকটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে বাজারে।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের সরবরাহ গত কয়েকদিনে বেড়েছে। আগে যেখানে দৈনিক গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ মণ ইলিশ আসত, এখন তা বেড়ে ৪০০–৫০০ মণ হয়েছে। ফলে শহরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সরগরম হয়ে উঠেছে ক্রেতা–বিক্রেতার আগমনে।
কয়েকদিন আগেও এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এখন তা ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর একেবারে ছোট সাইজের (২০০–২৫০ গ্রাম) ইলিশ কেজিপ্রতি ৫৫০–৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
অন্য সময়ের তুলনায় গত কয়েকদিন যাবৎ আড়তে ইলিশ বেশি আসছে এই খবর শুনে ইলিশ কিনতে আসলাম। দামও কিছুটা কমেছে। তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার লোকাল ইলিশ খুবই কম। খুচরা দোকান ঘুরে দেখি যদি দরদাম মিলে তাহলে কিনব।
হাজীগঞ্জ থেকে ইলিশ কিনতে আসা আমির হোসেন বলেন, শুনেছি গত কয়েকদিনে আড়তে ইলিশ বেশি আসছে, তাই কিনতে এসেছি। দাম কিছুটা কমেছে, কিন্তু চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার লোকাল ইলিশ এখনও কম। খুচনা দোকান ঘুরে দেখি, যদি দরদাম মিলে তাহলে কিনব।
ফরিদগঞ্জ থেকে আসা আলম মিয়া জানান, দাম কমেছে শুনে কিনতে আসলাম। কিন্তু দাম তো খুব একটা কমেনি। বড় সাইজের লোকাল ইলিশ ২২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ খুবই কম। একেবারে ছোট এবং বড় সাইজের ইলিশ ঘাটে বেশি। বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।
চাঁদপুর ঘাটের আড়ত মালিক রাসেল হোসেন জানান, পদ্মা-মেঘনার বড় সাইজের ইলিশ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা করে। হাতিয়া থেকে আসা একই সাইজের ইলিশ ২০০০ টাকা দরে ডাকে তুলে নিলাম। এখন তা আমরা খুচরা বিক্রি করছি ২১০০ টাকা করে।
খুচরা বিক্রেতা জাকির বলেন, এক কেজি ওজনের লোকাল ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১৫০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। হাতিয়ার ইলিশ প্রতি কেজি ১৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা। লোকাল ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ (২০০-২৫০ গ্রাম) প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর হাতিয়া ও ভোলার মাঝারি সাইজের ইলিশ ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। আর একেবারে ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা করে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারি জমাদার মানিক জানান, আগে প্রতিদিন এই কেন্দ্রে ৩ থেকে ৪ হাজার মণ ইলিশ বিক্রি হতো, এখন তা ৫০০ মণেরও কম। তবে গত সপ্তাহে সরবরাহ বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ব্যবসায়ীরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, বর্ষায় ইলিশের প্রাপ্যতা বাড়ে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরবরাহ অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে এবং স্থানীয় জেলেরাও উপকৃত হবেন।
পতাকানিউজ/এআই

