বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
ডা. তাহের বলেন, দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচারী সরকার পদত্যাগ করে পালিয়ে যায়। প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে এবং সংবিধানের অনেক বিধান কার্যকর থাকে না। জনস্বার্থ ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদ, ভিন্নমত দমন ও দুর্নীতির কারণে দেশের রাষ্ট্র কাঠামো অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তাই রাষ্ট্রের সব বিভাগের সংস্কার অপরিহার্য। গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার এবং স্বৈরাচার রোধে বিভিন্ন কমিশন গঠিত হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের আলোচনার পর ৮৪টি সিদ্ধান্তে মিল হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সংশোধনীসহ গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ সরকারকে উপস্থাপন করেছে এবং জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করতে জোরালো ভূমিকা পালন করছে।
ডা. তাহের জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ইতোমধ্যেই নির্ধারণ করা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য পিআর পদ্ধতি চালু করা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা আমাদের মূল দাবি। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি হলো:
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন।
২. জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু।
৩. সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির দৃশ্যমান বিচার।
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সকল জেলা/উপজেলায় মিছিলের আয়োজন করা হবে।
ডা. তাহের বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে প্রধান বাধা রাজনৈতিক ও আইনগত। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ঐকমত্য হলে দ্রুত কার্যকর সম্ভব। সরকার আমাদের দাবিসমূহ নির্বাচনের আগে অবশ্যই মানবে এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগরী নেতারা, সহকারী ও প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি সহ অন্যান্য সদস্যরা।
পতাকানিউজ/এনটি

