যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। আগের দিন মঙ্গলবার রাতে তিনি যুক্তরাজ্য পৌঁছেন। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে দুই দফা যুক্তরাজ্য সফর করেননি। ফলে ট্রাম্পের এই সফরকে বলা হচ্ছে নজিরবিহীন।
যুক্তরাজ্যে দুইদিন অবস্থান করবেন ট্রাম্প। এই সময়ে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লস, প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারসহ একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে এই সফরে ট্রাম্প কি কি চুক্তি করতে যাচ্ছেন সেই বিষয়ে।
বলা হচ্ছে, বাণিজ্য থেকে শুরু করে ইউক্রেণ যুদ্ধ- সব কিছুই থাকতে পারে আলোচনার টেবিলে। আবার চুক্তিও হতে পারে একাধিক।
স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে যুক্তরাজ্য পৌঁছার পর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে উইন্ডসরে রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজকীয় আতিথেয়তাসহ নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন ট্রাম্প দম্পতি।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবেন ট্রাম্প। মুল চুক্তিগুলো হতে পারে সেখানেই। বাণিজ্য, জাতীয় নিরাপত্তা, ভূরাজনীতির সঙ্গে অবধারিতভাবেই উঠে আসতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গও।
চুক্তির মধ্যে দুই দেশের পারস্পারিক সহযোগিতা জোরদার ছাড়াও একটি ট্রান্স-আটলান্টিক ট্রাস্কফোর্স’ গঠনের ঘোষণাও আসবে।
ইতোমধ্যেই স্টার্মারের দপ্তর থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ব্রিটেন-আমেরিকার সম্পর্ক ২৫০ বছরের পুরনো। এমতাবস্থায় ট্রাম্পের সফর এই সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
অন্যদিকে সফর ট্রাম্পের জন্য মানসিক স্বস্তির সফর। কারণ, সফরের এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে তাঁর ঘনিষ্ঠ মিত্র ও রক্ষণশীল সংগঠন চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড ট্রাম্পকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও চাইছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু যেন ভূরাজনীতি ও বিনিয়োগের দিকেই ঘুরে যায়। কারণ, গত কয়েক সপ্তাহ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে তাঁকে বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছে।
স্টারমার এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি ও জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চাইছেন।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও স্টারমার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি গ্রামীণ বাসভবনে বৈঠক করবেন। সেখানে উভয় দেশের বিখ্যাত কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারও যোগ দেবেন। এসব কর্মকর্তার মধ্যে এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াং এবং ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান অন্যতম। ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, আগামী ৪ বছরে তারা যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে। গুগল বলেছে, তারা ৫০০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করবে। এসব বিনিয়োগের একটি বড় অংশ লন্ডনে একটি নতুন ডেটা সেন্টার তৈরিতে ব্যয় করা হবে। কেন্দ্রটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) সেবার বাড়তি চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে।
পতাকানিউজ/এসজিএন

