গেলো ছয় মাসে ঢাকায় খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও কিশোর গ্যাং–এর তৎপরতা বেড়েছে। পুলিশের হিসাব বলছে, শুধু ঢাকাতেই প্রতিমাসে গড়ে খুন হচ্ছেন অন্তত ২০ জন। এ সময়ে খুনের মামলা হয়েছে ১২১টি, ডাকাতির ৩৩টি, ছিনতাইয়ের ২৪৮টি এবং চুরির মামলা হয়েছে এক হাজার ৬৮টি।
এমন পরিস্থিতিতেও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) দাবি করছে, অপরাধ পূর্বের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে আছে।
তবে আইন–অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়া, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও বিচারহীনতাই অপরাধ বাড়ার মূল কারণ।
গত ৩ আগস্ট রাতে মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের অফিসে হামলার ঘটনা ঘটায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয় পরিবহনের মালিকের ছোট ভাই, চালক ও কর্মচারিদের। দুই দিন পর দুজন গ্রেপ্তার হলেও মূল আসামিরা এখনো ধরা–ছোঁয়ার বাইরে।
এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর আদাবরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হন পুলিশের এক সদস্য। একই দিন নোয়াখালীর মাইজদীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার মতো নয়। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে যেসব চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই আমরা উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি।’
তবে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক মনে করেন, অপরাধ দমনে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা বড় ভূমিকা রাখছে। তার ভাষায়, ‘পুলিশকে আধুনিক যন্ত্রপাতি, গাড়ি, পোশাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে পারছে না। অপরাধীরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তাদের বড় অংশ মনে করে তারা যা খুশি তাই করতে পারে। আইন–শৃঙ্খলার তোয়াক্কা করে না। এর ফলেই অপরাধ বাড়ছে।’
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আইন প্রয়োগে কঠোরতা না আনলে আগামী কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।
পতাকানিউজ/এআই

