রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় দেশ কোল্ড স্টোরে (হিমাগার) ৬ আগস্ট নিরাপত্তারক্ষী এবং শ্রমিকসহ ২৫ জনকে হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৭ আগস্ট মোহনপুর থানায় একটি মামলা করেন হিমাগারের ব্যবস্থাপক আকবর আলী। এতে অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২৫ জনের একটি ডাকাত দল মুখ ঢেকে ও পায়ে জুতা ছাড়া দেশ কোল্ড স্টোরে প্রবেশ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে স্টোরের নিরাপত্তারক্ষী এবং শ্রমিকদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে হিমাগারের পাওয়ার হাউস, প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্ষিত যন্ত্রাংশ ও ধাতবসামগ্রী লুট করে। তারা নগদ টাকাসহ প্রায় ৬৪ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।
হিমাগারের ব্যবস্থাপক আকবর আলী বলেন, ‘ওই ঘটনার পরে হিমাগারের নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
মোহনপুর থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, ‘ঘটনাটির তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু এ ঘটনাটিই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী অঞ্চলে এই চক্র মিনি ট্রাকে করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ডাকাতি করছে। তারা মূলত মূল্যবান তামার তারের লোভে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে যন্ত্রাংশ লুটপাট করছে। আমরা ধারণা করছি, সংঘবদ্ধ এ চক্রটিই নাটোরের চিনিকলে কয়দিন আগে যে ডাকাতির ঘটনা ঘটে, সে ঘটনার সঙ্গেও জড়িত। আমরা মোহনপুর কোল্ড স্টোরের ভিডিও ফুটেজ এবং নাটোর চিনিকলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে মেলানোর চেষ্টা করেছি। তাতে মুখ খোলা একজন ব্যক্তিকে দুটি ঘটনার সঙ্গেই সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
ওসি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোহনপুরে মীর আক্তারের ওয়াটার পাম্প এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওয়াটার পাম্প এলাকার ট্রান্সফরমার লুটপাট করা হয়। এছাড়াও রাতের আঁধারে মিনি ট্রাক নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে এ চক্রটি ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গেও জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এদিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজশাহী শহরেও ব্যাপক হারে চুরির ঘটনা বেড়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই রাতে রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) থেকে একটি ল্যাপটপ ও একটি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে অভ্যান্তরিন তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন টিটিসির অধ্যক্ষ নাজমুল হক। সিসি ক্যামেরায় ঘটনার ভিডিও ফুটেজ থাকলে এ নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
জানতে চাইলে টিটিসির অধ্যক্ষ নাজমুল হক বলেন, ‘বিষয়টি নিজেদের ভাবমূর্তির বিষয়। এ কারণে থানায় অভিযোগ করিনি। তবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেখা যাক তদন্তে কি উঠে আসে। তার পর আমরা ব্যবস্থা নিব।’
জানা যায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় স্ইুট ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গহনা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে ধরে মারধর করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর কয়েকদিন আগে নগরীর হেতেম তেরোখাদিয়া এলাকার একটি মসজিদ থেকে দানবক্স চুরির ঘটনা ঘটে। তার কয়েকদিন আগে নগরীর সাহেব বাজার সোনাদিঘী মসজিদ থেকে দানবাক্স চুরির ঘটনা ঘটে।
জানতে চাইলে মহানগর আরএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও রাজশাহীর অবস্থান ভালো আছে। তারপরেও আমরা টহল জোরদার করেছি।’
পতাকানিউজ/আরআই/এএইচ

