থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ভুমজয়থাই পার্টির নেতা ও ব্যবসায়ী অনুতিন চার্নভিরাকুল। শুক্রবার দেশটির জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পান।
চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, জাতীয় পরিষদের ৪৯২ জন সদস্যের মধ্যে অনুতিনকে সমর্থন করেন ৩১১ জন।
নির্মাণ খাতের প্রভাবশালী এই উদ্যোক্তা ডানপন্থি ধনকুবের হিসেবে পরিচিত। পার্লামেন্টের তৃতীয় বৃহত্তম দল হলেও তার নেতৃত্বাধীন জোট এবার প্রধানমন্ত্রী পদ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার চালাদ খামচুয়াং আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন, ‘অনুতিন চার্নভিরাকুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হলো।’
৫৮ বছর বয়সী অনুতিন অতীতে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে তিনি ২০২২ সালে গাঁজা বৈধকরণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্যই সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কোভিড–১৯ মহামারি মোকাবিলায় দায়িত্ব পালনকালে পশ্চিমা দেশগুলোকে ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ করে সমালোচিত হয়েছিলেন; পরে অবশ্য ক্ষমা চাইতে হয় তাকে।
২০২৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে শক্তিশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের ফিউ থাই পার্টিই ক্ষমতায় ছিল। তবে গত সপ্তাহে আদালতের রায়ে দলটির নেতা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা মন্ত্রিপরিষদ নীতি লঙ্ঘনের দায়ে পদচ্যুত হন। মাত্র এক বছরের শাসনের পরই প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান তিনি।
একসময় পেতংতার্নের জোটকে সমর্থন করলেও চলতি গ্রীষ্মে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত ইস্যুতে ভিন্ন অবস্থান নেওয়ায় অনুতিন সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকলেও আমাদের সবার একমাত্র প্রতিপক্ষ দেশের শত্রুরা। তাই সবার এক কাতারে দাঁড়ানো উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হতে গিয়ে অনুতিন সবচেয়ে বড় বিরোধী দল পিপলস পার্টির ১৪৩ আসনের সমর্থন নিশ্চিত করেছেন। তবে শর্তসাপেক্ষে তাকে বলা হয়েছে—চার মাসের মধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন নির্বাচন দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, পদচ্যুত পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা গত জুনে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফোনালাপে আপসমূলক মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন। একইসঙ্গে তিনি থাই সামরিক কমান্ডারদের সমালোচনাও করেন। আদালত মনে করে, এটি মন্ত্রিপরিষদের নীতি লঙ্ঘন এবং নৈতিকতার পরিপন্থী আচরণ। তবে পেতংতার্ন দাবি করেন, ওই আলাপ কূটনৈতিক সমাধান আনার উদ্দেশ্যেই হয়েছিল।
পতাকানিউজ/ওয়াইএস

