কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ বস্তা ভর্তি করে বসত ভিটার পাশে মাটি চাপা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মর্মাত্মিক এই ঘটনা জানাজানি হয় হত্যাকাণ্ডের অন্তত ৩৬ ঘণ্টা পর।
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেবর, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেইলপাড়া কুরিমারিয়ারছড়া এলাকায় পৌঁছায়। পরে রাত ৯টায় স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি খুড়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তি হলেন, মোহাম্মদ ছৈয়দ (৫০)। আর অভিযুক্ত ছেলে হলেন মোহাম্মদ রফিক।
স্থানীয়রা জানান, নিহত ও গ্রেপ্তার ব্যক্তি সম্পর্কে বাবা-ছেলে। মোহাম্মদ ছৈয়দের সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। তিনি কয়েক বছর আগে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে খুরুশকুলের কুমারিয়ারছড়া এলাকায় এসে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। পুরো পরিবারটি রোহিঙ্গা নাগরিক।
নিহতের প্রতিবেশীসহ স্থানীয়রা আরও জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মোহাম্মদ ছৈয়দের বাড়ির আশপাশের উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন স্থানীয়রা দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তার বাড়ির ধানক্ষেতের পাশে মাটি চাপা দেয়া একটি শার্ট দেখতে পান। সেখান থেকে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেন।
গ্রেপ্তার রফিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘সোমবার ভোরে তার শ্বশুর মোহাম্মদ ছৈয়দ স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। সকালে বাড়ি ফিরলে শাশুড়ির সঙ্গে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে তার স্বামীও কলহে জড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী রফিক বাবাকে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করে। আঘাতে শ্বশুর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আহত হন। পরে মৃত্যু হলে লাশ বস্তাবন্দি করে ঘরে ফেলে রাখা হয়।
ঘটনার কথা কারও কাছে প্রকাশ করলে তার স্বামী ‘বাবার মত’ পরিণতি ভোগ করারও হুমকি দেয় বলে জানান অভিযুক্তের স্ত্রী শারমিন।’
এদিকে সোমবার মধ্যরাতে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছৈয়দের স্ত্রী, দুই সন্তান রফিক ও সাহাবউদ্দিন জিয়া মিলে সোমবার রাত ১০ টায় বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মাটি চাপা দিয়ে মরদেহ পুঁতে রাখে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ছৈয়দের স্ত্রী ও সন্তানরা পালিয়ে আত্মগোপন করে।
‘পারিবারিক কলহের’ জেরে এঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণার কথা বলেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াছ খান। তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
মামলা নথিভূক্ত হওয়ার পর জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে বলে জানান ইলিয়াছ খান।
পতাকানিউজ/এনএ/এএইচ

