ম্যাচের আগে রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা ছিল ভরপুর। মাঠে খেলা শেষে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সাথে ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের হাত না মেলালো নিয়ে সেই উত্তাপ যেন আরেকটু বেড়েছে। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে পাকিস্তানের সহজ আত্মসমর্পণ ক্ষুব্ধ করেছে দেশটির সাবেক ক্রিকেটারদের। দলের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন শোয়েব আকতার ও ওয়াহাব রিয়াজসহ কয়েকজন।
শোয়েব আখতারের বলের গতির মতই ক্ষুরধার তার সমালোচনা। রবিবার খেলা শেষে পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল পিটিভি স্পোর্টসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে শোয়েব আখতার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, পাকিস্তান ক্রিকেট দল এখন ক্লাব লেভেলের ক্রিকেট খেলছে আর ভারত খেলছে বিশ্বমানের, পার্থক্যটা অনেক বড়। এরমধ্য দিয়ে আমাদের ক্রিকেটের মান কেমন, সেটা জানা হয়ে গেল। কোনো কৌশল নেই, সিঙ্গেল নিতে পারে না এবং মানসম্পন্ন ব্যাটসম্যানও নেই আমাদের।
পাকিস্তান দলের ব্যাটিং নিয়ে হতাশা গোপন না করে শোয়েব আখতার বলেন, শুরুতে ব্যাট করুক কিংবা শেষে, পাকিস্তান ১৩০ রানের বেশি করতে পারত না। সেটাই হয়েছে।
বিপরীতে ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছেন দরাজ দিলে। সুরিয়াকুমার যাদব ও তিলক ভার্মার ব্যাটিং এর ভূয়সী প্রশংসা করে শোয়েব আখতার বলেন, দেখেন অনেকে অনেক কথা বলবে, উইকেট পরিস্থিতি এসব নিয়ে। কিন্তু আপনি ভারতের ব্যাটারদের শট সিলেকশন দেখেন। শুধু চার ছক্কা নির্ভর নয়, এই কাট করছেন, এই কিছুটা ধীরে বল ঠেলে দিয়ে এক নিচ্ছেন দুই নিচ্ছেন, সুইপ করছেন।
পাকিস্তানের বর্তমান দলটিকে আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর চেয়ে সামান্য একটু ভালা দল মনে করেন সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই স্পিড স্টার। শোয়েব আখতার বলেন, মানের দিক থেকে আমাদের অনেক ঘাটতি আছে। আমরা এমন দল নই, যারা দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। আমরা সহযোগী দেশগুলোর চেয়ে সামান্য একটু ভালো দল।

পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার ওয়াহাব রিয়াজ ভারতীয় বোলারদের অকুণ্ঠ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক বিশ্লেষণে তিনি বলেন, ভারতের হয়ে এই ম্যাচে সেরা বোলার ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব। ১৮ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। কুলদীপ ব্যাটারদের মন পড়তে পারেন। এটা তাকে সবসময় এক ধাপ এগিয়ে রাখে। তার অনেক বৈচিত্র্য আছে। এটাই বড় শক্তি।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সহজ জয়ের পর কটাক্ষের তীর ছুড়েছেন ভারতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রবিচন্দ্রান অশ্বিন। তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ক্রিকেটের মান দেখিয়েছে ভারত। এবারের এশিয়া কাপ থেকে আয়োজকদের শিক্ষা নিতে হবে। পাকিস্তান ভারত ম্যাচ বেশি বেশি দেয়ার কোনও মানে হয় না।
অশ্বিন যতই সমালোচনা করুক দর্শকদের কাছে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচই ক্রিকেট বিশ্বে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত ম্যাচ। এবারের এশিয়া কাপে হয়ত আরো ২ বার দেখা হয়ে যেতে পারে দল দুটিকে। প্রথম ম্যাচের পর দুই দলের ক্রিকেটারদের হাত না মেলানো নিয়ে যে ঝড় উঠেছে ক্রিকেট বিশ্বে তাতে এই পূর্বাভাষ করাই যায় যে, সামনের লড়াইগুলোতেও উত্তেজনায় ভরপুর থাকবে ২২ গজের সীমানা।
পতাকানিউজ/এসজিএন

