বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে রবিবার ১০ আগস্ট রাতে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় পর সীমান্তে আকস্মিক গোলাগুলির শব্দে আবারও আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
বিজিবির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আরাকান আর্মির সাথে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা বা আরএসও এর মধ্যে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তে বিজিবি কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, রবিবার রাত ১০টার পর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোন গুলি না আসলেও তাৎক্ষণিক বিজিবির টহলদলের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
লে. কর্নেল খায়রুল বলেন, ‘মধ্যরাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু এলাকার সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫ এর মাঝামাঝি এলাকায় শূণ্যরেখা থেকে আনুমানিক ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার দূরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আকস্মিক ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। টানা ৭ থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত গোলাগুলি ঘটে। এতে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে সীমান্তের এপারে গুলি আসেনি।’
‘মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরসা বা আরএসও’র গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটতে পারে।’
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের এপারে গুলি আসেনি। এটি মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঘটেছে।’ ঘটনার পরপর রাতেই বিজিবি টহলদলের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কঠোর অবস্থান নেয় বলে জানান, লে. কর্নেল খায়রুল আলম। ওপারের তুমব্রুর নারিকেল বাগিচা এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দুটি ক্যাম্প থাকায় স্থানীয়দের ধারণা সেখানে হঠাৎ করে বড় কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ভূট্টো বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় বছরের বেশী সময় পর সীমান্তে গুলির শব্দ শোনা গেছে। অনেকক্ষণ যাবত অনবরত গুলির শব্দ পেয়েছি, সেখানে কী হচ্ছে তা বুঝা মুশকিল। ঘটনায় সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে সীমান্তে বিজিবি কঠোর সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম।
২০২৩ সালের অক্টোবরে মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে প্রতিরোধ শুরুর এক বছরেরও বেশি পরে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি।
পতাকানিউজ/এনএ/এসজিএন
