এক ব্যঙ্গাত্মক পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন আলাস্কার একটি সামরিক ঘাঁটিতে যা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং এখনও তা করছে।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বৈঠক আগামী শুক্রবার অ্যাঙ্কোরেজের জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে অনুষ্ঠিত হবে। এলমেনডর্ফ বিমান ঘাঁটি ও ফোর্ট রিচার্ডসন সেনাঘাঁটি একীভূত করে ২০১০ সালে এই বেস গঠন করা হয়। স্নায়ু যুদ্ধের অধিকাংশ সময় জুড়ে এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধে কৌশলগত ভূমিকা রাখে।
বেসটির দীর্ঘ ইতিহাসে এটি প্রচুর বিমান স্থাপন করেছে এবং প্রাথমিক সতর্কীকরণ রাডার সাইটগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যা সোভিয়েত সামরিক তৎপরতা ও সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলা শনাক্তে ব্যবহৃত হতো। তখন এর স্লোগান ছিল ‘উত্তর আমেরিকার শীর্ষ প্রতিরক্ষা’। বর্তমানে যদিও অনেক সামরিক সরঞ্জাম অব্যবহৃত, তবুও এখানে এফ-২২ র্যাপ্টর স্টেলথ ফাইটারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্কোয়াড্রন রয়েছে। এখানকার বিমান এখনও রুশ বিমানকে প্রতিহত করে, যারা প্রায়শই মার্কিন আকাশসীমায় প্রবেশ করে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো বেনজামিন জেনসেন বলেন, মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং প্রতিবাদ এড়াবে। ‘ট্রাম্পের জন্য এটি আমেরিকার সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি পুতিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার পরিবেশ তৈরির সুযোগ।’
জেনসেনের মতে, এ ধরনের স্থানে বৈঠক ট্রাম্পকে সামরিক শক্তির বার্তা দিয়ে দরকষাকষির সুবিধা এনে দেবে এবং দ্বিতীয় বৈঠকের পথ প্রশস্ত করবে।
রুশ হুমকি মোকাবিলার দীর্ঘ ইতিহাস থাকা একটি মার্কিন ঘাঁটিতে পুতিনের উপস্থিতি এমন সময়ে হচ্ছে, যখন ট্রাম্প দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার চেষ্টা করছেন যা তিনি ২০২৪ সালের প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া একান্ত বৈঠক রাশিয়ার স্বার্থে ফলাফল বয়ে আনতে পারে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র সম্মেলনে যুদ্ধবিরতি চায়। ম্যাক্রোঁ এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতার ভার্চুয়াল বৈঠকের পর।
ট্রাম্প বলেছেন, বড় কোনো চুক্তিতে ভূমি বিনিময় থাকতে পারে এবং জেলেনস্কি ও পুতিন সরাসরি মিলিত হতে পারেন অথবা তিনি নিজেই উভয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্বিতীয় বৈঠকের সম্ভাবনা খুব বেশি, যা প্রথমটির চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হবে। প্রথম বৈঠকে আমি বুঝতে চাই আমরা কোথায় আছি এবং কী করছি। এটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, তবে মূলত দ্বিতীয় বৈঠকের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করবে।’
অ্যাসোসিয়েট প্রেস–
পতাকা নিউজ/এসকে

