চট্টগ্রামের আওলাদ হোসেন প্রায় ১০ বছর আগে কাজের সুযোগ খুঁজে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। শুরুতে একটি খাবার হোটেলে তার জীবন কাটছিল স্বাভাবিকভাবে, কিন্তু তিন বছর পর ভিসা নবায়ন না হওয়ায় তিনি অবৈধ প্রবাসী হয়ে যান। এরপর বহু বছর কেটে গেলেও দেশে ফিরতে পারেননি।
আওলাদের মতো আরও লাখো প্রবাসী একই সমস্যায় ভুগছেন। অনেকে পাঁচ বছর, কেউবা ১০ বছর ধরে দেশে ফেরার সুযোগ পাননি। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে পরিবারের প্রিয়জনদের অনেকেই চলে গেছেন, কিন্তু শেষবারের মতো দেখা করার সৌভাগ্য হয়নি।
বর্তমানে এরা মূলত নিম্ন বেতনে কাজ করছেন এবং মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের একমাত্র আশা হলো বৈধতা ফিরে পাওয়া। এই পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের দিকে তাকিয়ে আছেন।
২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের জন্য চালু হয় জিটুজি ও জিটুজি প্লাস পদ্ধতি। কলিং ভিসার মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি এশিয়ার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। ভিসার মেয়াদ সাধারণত ২ থেকে ৩ বছর হলেও নবায়ন না হওয়ায় বহু প্রবাসী বর্তমানে অবৈধ। সর্বশেষ কলিং ভিসার মাধ্যমে পৌনে ৫ লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় পৌঁছালেও কাগজপত্রহীনদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। ফলে মালয়েশিয়ায় বৈধতা হারানো প্রবাসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান মনে করছেন, এই সমস্যার পিছনে দুই দেশের সিন্ডিকেটের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কার্যকলাপ দায়ী। যারা বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্বে ছিলেন, তারা ব্যর্থ হয়েছেন এবং নিজের স্বার্থে কাজ করেছেন। এ কারণে প্রবাসীরা প্রতারিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জন্য কোনও প্রভাব পড়েনি।
পতাকানিউজ/এনটি

