বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনস্থল যেন এক আবেগঘন দৃশ্যের সাক্ষী হলো। ৭ শিক্ষার্থী টানা ২৪ ঘণ্টা আমরণ অনশনে বসে আছেন, পাশে মশারি টানিয়ে রাত কাটালেন উপাচার্য নিজে। অবশেষে তার হাতেই জুস পান করে ভাঙল শিক্ষার্থীদের অনশন।
শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি ঘিরে এই আন্দোলনের সূচনা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায়। ইংরেজি, গণযোগাযোগ, দর্শন, রসায়ন, অ্যাকাউন্টিং ও আইন বিভাগের ৭ শিক্ষার্থী অনশন ঘোষণা দেন।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা খাদ্যগ্রহণ করবেন না। রাত গড়িয়ে ভোর হলেও অনশনস্থলে দাবি অটল রেখে বসে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
মধ্যরাতে হাজির হন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম। অনশনের মঞ্চেই ঘুমোতে বসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। ভোরে মশারির ভেতরে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের পাশে শুয়ে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদাধিকারী। কিন্তু আশ্বাসে কাজ হয়নি, লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া উঠতে নারাজ অনশনকারীরা।
অবশেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন রোডম্যাপ’ হাতে নিয়ে আবার উপস্থিত হন উপাচার্য। চার দফা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, ছয় মাসে সম্ভাব্যতা যাচাই, শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি বাস, দ্রুত নতুন অ্যাম্বুলেন্স কেনা আর ১৫ দিনের মধ্যে জমির পুনর্মূল্যায়ন অন্যতম।

উপাচার্য হাতজোড় করে অনুরোধ করলে অনশনকারীরা রাজি হন। মুহূর্তটা আবেগঘন। জুস হাতে নিয়ে উপাচার্য নিজেই একে একে খাইয়ে দিলেন ৭ শিক্ষার্থীকে।
শিক্ষার্থী গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজয় শুভ বলেন, উপাচার্য লিখিত রোডম্যাপ দিয়েছেন। তার আশ্বাসে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল শেষে বললেন, আমাদের কর্মপরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে। তারা এখন সুস্থ আছেন।
পতাকানিউজ/এআই

