ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) হালিশহর শাখায় জুনিয়র ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তাজকেরাতুন নেছা। দায়িত্বপালনের সময় বিভিন্ন গ্রাহক ইউটিলিটি বিল জমা করলেও তিনি তা গ্রহণ করে নিজের ব্যাগে করে নিয়ে যেতেন। এ অবস্থায় একদিন তিনি ধরা পড়েন। এসময় তিনি কিছু টাকা ফেরত দেন। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়। ওই মামলার পৃথক ধারায় তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আত্মসাত করা ৩ লাখ ১২ হাজার ৬৬৪ টাকা জরিমানা করেছেন।
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। তাজকেরাতুন নেছা (৪৩) ফটিকছড়ির ভুজপুর থানার দাঁতমারা এলাকার আবদুল মজিদ খানের মেয়ে। তিনি নগরের চকবাজার থানার সিরাজদ্দৌল্লা রোড চন্দনপুরা এলাকায় থাকতেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ কবির হোসাইন পতাকানিউজকে বলেন, ‘বিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাজকেরাতুন নেছাকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪২০ ধারায় ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া গ্রাহকের আত্মসাত করা ৩ লাখ ১২ হাজার ৬৬৪ টাকা জরিমানা করেছেন। এ মামলায় ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।’
আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাহেদ কবির বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর থেকে আসামি পলাতক রয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য পরিচালিত হয়েছিল। রায় ঘোষণার পর আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।’
২০১৮ সালের ২৫ মার্চ ইউসিবি ব্যাংকের হালিশহর শাখায় জুনিয়র ক্যাশ অফিসার হিসেবে যুক্ত হন তাজকেরাতুন নেছা। ব্যাংকে যুক্ত হওয়ার ৩ দিন পর থেকেই তিনি জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়মে। ২৮ মার্চ থেকে তাকে ব্যাংকের ইউটিলি বিল গ্রহণে একক দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে নগদ টাকা দেখে তিনি লোভ সামলাতে পারেননি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে গ্যাস ও ওয়াসার বিল বাবদ ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫৩ টাকা ব্যাংকে জমা না করে নিজের ব্যাগে করে নিয়ে যেতেন।
পরে ওয়াসা ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি থেকে ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ এলে নড়েচড়ে বসে ব্যাংক কতৃপক্ষ। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি মৌখিকভাবে ৫ লাখ টাকা আত্মসাত করার কথা জানান ব্যাংক কতৃপক্ষকে। এসময় তিনি ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৫৯ টাকা ফেরত দেন।
পরে তিনি কর্মস্থলে আসা বন্ধ করে দিলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এসময় তাকে জুনিয়র ক্যাশ অফিসার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তবে তিনি ব্যাংকের পাওনা গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া ৩ লাখ ১২ হাজার ৬৬৪ টাকা পরিশোধ করেননি।
২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর তৎকালীন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন তাজকেরাতুনের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় রায় ঘোষণা করা হয় বুধবার।
পতাকানিউজ/আরএস/এএইচ

