বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের তিন দাবি আদায়ে আমরণ অনশন ভাঙাতে না পেরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম নিজেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাত কাটালেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে এসময় মশারি টাঙিয়ে রাতভর অবস্থান করেন তিনি। উপাচার্যের এমন পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রতি তার সংহতি ও সহানুভূতি প্রকাশের এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর নিচে সাতজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। তাদের দাবিগুলো ছিল—অবকাঠামো উন্নয়ন, আয়তন বৃদ্ধির জন্য জমি অধিগ্রহণ এবং শতভাগ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা এই যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করছেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অনশনরত শিক্ষার্থী শওকত ওসমান স্বাক্ষর বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনের মতো কঠিন কর্মসূচিতে গিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।
আরেক শিক্ষার্থী তাইজুল ইসলাম তাজ জানান, তারা একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন এবং এমনকি নির্মাণাধীন নভোথিয়েটার ও বিটাক ভবনও দখল করেছিলেন, কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পুরোপুরি যৌক্তিক। আমাদের উন্নয়নকার্যক্রম চলমান আছে এবং জমি অধিগ্রহণের বিভিন্ন ধাপগুলোও এগোচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের ওপর শিক্ষার্থীদের আস্থার সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ৩৬ দিন ধরে আন্দোলন করেছি, কিন্তু কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। জনভোগান্তি এড়াতে আমরা সড়ক ছেড়েছি, কিন্তু দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।
উল্লেখ্য, উপাচার্যের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে, অন্যদিকে এটি প্রমাণ করে যে প্রশাসনিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে। এখন সবার চোখ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে। কেননা, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ না হলে এই অনশন আরো বড় সংকট তৈরি করতে পারে।
পতাকানিউজ/আইবিএম

