স্ত্রী, মা ও দুই সন্তানকে নিয়ে জাফলং বেড়াতে গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের শীর্ষসন্ত্রাসী রিয়াজ। এ সময় র্যাব সদস্যরা তাকে ধরতে চেষ্টা করলে তিনি কৌশলে প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৬-১৫১৯) সন্তানদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আলীরগ্রামে গিয়ে একটি বাড়ির বারান্দায় দুই শিশুকন্যাকে ফেলে রেখে পালানোর চেস্টা করেন।
এসময় শিশু অপহরণকারী সন্দেহে এলাকাবাসী তাকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে। পরে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হলে জানা যায়, আটক রিয়াজ নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজ বাহিনীর প্রধান, ‘শুটার’ রিয়াজ নামে এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে।
বুধবার ৩ সেপ্টেম্বর, বিকেলে সিলেট গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলীরগ্রাম এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ‘গোয়াইনঘাটে রিয়াজের অবস্থানের খবর পেয়ে তাকে সন্ধান করছিল র্যাব। ওই সময় একটি গাড়িতে করে রিয়াজ তার ২ শিশুকন্যাকে নিয়ে গোয়াইনঘাটের আলীরগ্রামের দিকে যান। তার পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে বুঝতে পেরে তিনি আলীরগ্রামের একটি বাড়ির বারান্দায় দুই শিশুকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।’
‘২ শিশুকে রেখে পালানোর ঘটনায় গ্রামবাসীর সন্দেহ হলে তাঁকে ধাওয়া করে আটক করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করেন। খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিয়াজুল ও ২ শিশুকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। পরে রিয়াজকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিচয় পাওয়া যায়।

গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সুমন বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজিত গ্রামবাসীকে শান্ত করেন। প্রথমে বিষয়টি ভূল-বোঝাবুঝি হিসেবে মনে করেছিলেন। পারিবারিক কলহের কারণে দুই শিশু বাচ্চাকে নিয়ে তাদের বাবা গাড়িতে করে বেরিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। তবে থানায় যাওয়ার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
তিনি বলেন, ‘শুনেছি ওই ব্যক্তিকে র্যাব ধাওয়া করেছিল। র্যাবের হাত থেকে বাঁচতে দুই শিশুকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখন এলাকাবাসী শিশু অপহরণকারী সন্দেহে আটক করেন। আটক রিয়াজ মা ও স্ত্রীসহ জাফলংয়ে এসেছিলেন।’
গোয়াইনঘাট থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’
রিয়াজের বিরুদ্ধে হত্যা, খুনসহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। শুটার রিয়াজকে র্যাব ২০২২ সালে একবার আটক করেছিলো। সে সময় তার কাছ থেকে ৩টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি ম্যাগজিন, ১২ রাউন্ড গুলি, ৫টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র, ১টি মোটর সাইকেল এবং ৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছিল।
পতাকানিউজ/এমওয়াই

