রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে ৫ বছর ধরে নেই লাইসেন্স নবায়ন, নেই পরিবেশ ছাড়পত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র। তবুও ওই হাসপাতালে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা চলছে সমানতালে।
দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করে আসছেন অষ্টম শ্রেণি পাস যুবক। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অপারেশন কক্ষে গিয়ে প্রশান্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা। পরে তিনি বোরকা পড়ে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাত থেকে রক্ষা পাননি।
দুই ঘণ্টা টয়লেটে বোরকা পড়ে লুকিয়ে থাকার পর প্রশান্তকে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হলে আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশু তাকে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক সামসুদ তিবরীজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৩দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই বিচারক। তাৎক্ষণিক হাসপাতাল মালিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করলে জেল থেকে থেকে রক্ষা পান।
রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা পলাশবাড়ি উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের ময়না বেগমের (২৬) সন্তান প্রসব বেদনা ওঠলে বুধবার সকালে ওই বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে তার সিজার করা হয়।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, ‘অভিযানে ওই বেসরকারি হাসপাতালের ওটিতে গিয়ে এক প্রসূতি নারীকে পাওয়া যায়। তখন সিজার করে তাঁর সন্তান বের করা হয়েছিল। সেলাই দিচ্ছিলেন এক যুবক। তিনি প্রথমে নিজেকে চিকিৎসক দাবি করেন। পরে বলেন আমি চিকিৎসক নই, এইট পাশ করেছি মাত্র। এরপর তিনি বোরকা পড়ে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেন।’

বেসরকারি হাসপাতালের মালিক দাবি করছিলেন ওই নারীর সিজার করিয়েছেন রংপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র চিকিৎসক রিফাত আরা। তবে রিফাতকে ওই সময়ে পাওয়া যায়নি-বললেন সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা।
এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, ‘ওই বেসরকারি হাসপাতালের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। লাইসেন্স ছিল তা ৫ বছর আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে। নবায়নের জন্য আর আবেদন করেনি।’
পতাকানিউজ/এসআই/এসজিএন

