সুদানের পশ্চিমাঞ্চলের দারফুরে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছে শরণার্থী শিবিরজুড়ে। প্রতিটি মুহূর্ত যেন আতঙ্কে ভরা। আগুনে পানি ফুটে উঠার আগেই মাছি এসে পড়ে, সবকিছু আবারও সংক্রমিত হয়ে পড়ে।
বুধবার, ১৩ আগস্ট আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দারফুরের তাওয়িলার শিবিরগুলোতে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত গতিতে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ শুধুমাত্র ফুটানো পানি দিয়ে নিজেদের চিকিৎসা চালাচ্ছে।
তাওয়িলার এক শিবিরে গত দুই মাস ধরে বাস করা মোনা ইব্রাহিম বলেন, ‘যখন লেবু পাই, আমরা তা পানিতে মিশিয়ে ওষুধ হিসেবে খাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’ এ কথা বলার সময় তিনি খালি মাটিতে বসে পড়েন।
চলতি বছরের এপ্রিলে প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) -এর হামলা থেকে বাঁচতে এল-ফাশার শহর এবং জামজাম অভ্যন্তরীণ শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে এসে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ আশ্রয় নেন তাওয়িলা ও তার আশেপাশের এলাকায়। আরএসএফ -এর সঙ্গে সুদানের সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলছে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে।
ডাক্তারদের সংগঠন ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’ (এমএসএফ)-এর প্রকল্প সমন্বয়ক সিলভ্যান পেনিকোড জানান, তাওয়িলার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে তাবিত গ্রামে জুনের শুরুতে প্রথম কলেরা শনাক্ত হয়।
“দুই সপ্তাহের মধ্যেই তাওয়িলার অভ্যন্তরেই, বিশেষ করে শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোগী শনাক্ত হতে শুরু করে,” বলেন পেনিকোড।
মাত্র এক মাসেই তাওয়িলায় ১৫শতের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ইউনিসেফের মতে, শুধু তাওয়িলা শহরেরই প্রায় ৩০০ শিশু এপ্রিল থেকে কলেরা আক্রান্ত হয়েছে।
উত্তর দারফুর রাজ্যজুড়ে পাঁচ বছরের নিচের প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশু কলেরা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ইউনিসেফ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ জুলাই পর্যন্ত পুরো দারফুরে ২ হাজার ১৪০ জন কলেরা রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৮০ জনের।
এই কলেরা মহামারী দারফুরের উদ্বাস্তু জনগণের জীবনকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যেখানে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সেবার চরম সংকট চলছে।
সূত্র: আল জাজিরা
পতাকানিউজ/এসজিএন

