শেখ হাসিনার আমলে যারা রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী ছিলেন, তাদের বিদেশ পালানোর সুযোগ করে দিতে প্রশাসন বিশেষ নির্দেশনা দিচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দশম শ্রেণির ক্ষুদে বিজ্ঞানী নাবিলের গ্রামের বাড়িতে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী প্রদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ অভিযোগ করেন।
এসময় প্রশাসনে ‘ঘাঁপটি মেরে’ বসে থাকা লোক নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তাদেরকে শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা ও দোসর আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তারা প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবস্থান নিয়ে পাতানো পরিকল্পিত অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকার যাতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
সাংবাদিকদেরকে রুহুল কবীর রিজভী আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া প্রেতাত্মারা এখনো প্রশাসনে সক্রিয়। যেসব নেতা-কর্মকর্তা অন্যায় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের দেশ ত্যাগের জন্য পাসপোর্ট অফিসকে গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে। অথচ অপরাধে অভিযুক্ত বা অভিযুক্ত হওয়ার মতো ব্যক্তিদের কখনোই এ সুযোগ দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা লোকেরা হাসিনার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘জনগণের ওপরে কোনো শক্তি নেই। শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিকে অবজ্ঞা করেছিলো। কিন্তু জনগণের কাছেই মাথানত করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। নতুন করে যতই ষড়যন্ত্র করা হোক এরা পরাজিত হবে এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে। পাশাপাশি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে দেশ পরিচালিত হবে।’
জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচিত পার্লামেন্ট ছাড়া পূর্ব থেকেই কোনো কিছুকে আইন হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। তাহলে যে আইনের শাসনের জন্য লড়াই করা হয়েছে সেই আইনের শাসনের লড়াইয়ের চেতনাকে ব্যহত করা হবে।’
মেধাবী শিক্ষার্থী নাবিল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কিশোর বয়সে তার উদ্ভাবনী চিন্তা চেতনা অবিশ্বাস্য। তার প্রতিভার সন্ধান পেয়ে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।’
এ সময় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক খোকন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচিসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নেতা-কর্মীরা রুহুল কবীরকে স্বাগত জানান। পাশাপাশি নাবিলের পাশে থাকার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, কিশোর গবেষক নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আহনাফ বিন আশরাফ নাবিল গার্ডিয়ান এঞ্জেল নামে একটি অ্যাপস উদ্ভাবনে কাজ করছে। এর মাধ্যমে নারী ও শিশু নিরাপত্তা নিশ্চিত, জলবায়ু পরিবর্তন রোধসহ ১৯ বিষয়ে ডিজিটাল সমাধান হিসেবে কাজ করবে। এটি তিনি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
পতাকানিউজ/ বিপিবি/এসজিএন

